মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্য বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হাবীব ইউসুফ রহমত উল্লাহ এর সহকারী সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে এখতিয়ার বহির্ভুতভাবে রোগী দেখা এবং ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে অপ-চিকিৎসার শিকার হয়ে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাচ্ছে সরকারীভাবে সেবা নিতে আসা অসংখ্য রোগী সাধারন।
জানাগেছে, সরকারি জেনারেল হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ হাবিব ইউসুফ রহমতউল্লাহ সপ্তাহে মাত্র তিন দিন ডিউটি করেন। বাকি দিনগুলো রোগী দেখেন তার সহকারী সিরাজুল ইসলাম।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, সিরাজুল ইসলাম সাটুরিয়া উপজেলার বড়াইদ ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার। তিনি ২০০৮ সালে মানিকগঞ্জ সরকারি জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্ত হয়ে চক্ষু বিশেষজ্ঞের সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন।
সরেজমিনে বুধবার ১৩ নভেম্বর ও বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের তৃতীয় তলার ৩০১ নম্বর কক্ষে রোগীদের অসংখ্য ভিড় দেখা যায়। রোগীদেরকে লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞ না থাকলেও ঐ কক্ষে বসে সিরাজুল ইসলামকে পরীক্ষা নিরীক্ষা ও চিকিৎসক পত্র লিখতে দেখা গেছে।
সাটুরিয়া উপজেলার হাজিপুর এলাকা থেকে আসা ১৯ বছর বয়সী দীপা আক্তার জানান, আমি অনেকদিন যাবত চোখে কম দেখতে পাচ্ছি। তাই বিশেষজ্ঞ চক্ষু ডাক্তার দেখাতে মানিকগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে এসেছি। ৫ টাকা দিয়ে টিকিট কাটার পর ৩০১ নম্বর রুমে যাই। সেখানে পরীক্ষা-নিরিক্ষার পর সিরাজুল ইসলাম আমাকে ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ সেবন করছি। বর্তমানে আমার চোখের কোন উন্নতি হয়নি।
সদর উপজেলার চামটা এলাকার বাসিন্দা ৩৫ আক্তার বছর বয়সী আকতার আলী জানান, ৩১ অক্টোবর আমি চোখের সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে সদর হাসপাতালে আসি। সিরাজুল ইসলাম আমাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন। এখনো আমার চোখের সমস্যা দূর হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোগী জানান, হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হাবিব ইউসুফ রহমতউল্লাহ'র অবর্তমানে সিরাজুল ইসলাম চক্ষু বিশেষজ্ঞের দায়িত্ব পালন করে থাকে। তাই বাধ্য হয়ে আমি বেসরকারি হাসপাতালের শরণাপন্ন হচ্ছি। তিনি বলেন, ঔষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে আতাত করে সিরাজুল দীর্ঘ যেদিন যাবত তার লেখা ব্যবস্থাপত্রে অতিরিক্ত ঔষধ লিখে থাকেন।
এ বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম বলেন, কনসালটেন্ট সপ্তাহে শনিবার, সোমবার ও মঙ্গল বার রোগী দেখেন। বাকি দিনগুলো আমাকে সামলাতে হয়।
এ বিষয়ে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হাবীব ইউসুফ রহমত উল্লাহ জানান, আমি ঢাকায় আছি। কোন কিছু জানা থাকলে শনিবার অফিসে আসেন।
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দীন বলেন, কোন অভিযোগ থাকলে লিখিত আকারে দেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।